ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোহাম্মদ রাসেল বর্তমানে এক বিতর্কিত অবস্থায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে এবং শত শত পাওনাদার তার কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অভিযোগ করছেন। একদিকে, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, অন্যদিকে তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমনকি সামাজিক মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে উপহাস করতেও তাকে দেখা যাচ্ছে। এটি প্রমাণ করছে যে, তার মধ্যে জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই, বরং তিনি একধরনের উপহাস করেই চলছেন।
সম্প্রতি, মোহাম্মদ রাসেল তার ফেসবুকের ভেরিফাইড পেজে জনগণের মতামত জানার জন্য একটি সুযোগ প্রদান করেছিলেন। তিনি কয়েক ঘণ্টার জন্য মেসেঞ্জারে জনসাধারণের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে ঘটে গেলো একটি অবাক করা ঘটনা। মাত্র এক ঘণ্টার কম সময়ে, প্রায় দুই হাজার মানুষ তার মেসেজ দেখেন এবং ১৯৯ জন মেসেজ পাঠান, যাদের অধিকাংশই ছিল পুরনো টাকার জন্য অভিযোগ।
এভাবে, মোহাম্মদ রাসেল জনগণের যে দুর্দশা ও অসন্তোষের কথা শুনছিলেন, তা উপেক্ষা করে তার কয়েকজন অনুসারির মেসেজের উত্তর দিয়েছেন এবং বাকিদের মেসেজ অগ্রাহ্য করেছেন। পাওনাদাররা এই আচরণকে ‘উপহাস’ হিসেবে দেখছেন। এমনকি তিনি যাদের উত্তর দিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই তার ব্যক্তিগত অনুসারী ছিলেন, যাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো। কিন্তু অন্যান্য মানুষদের প্রতি যে অবজ্ঞা প্রদর্শিত হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে।
এদিকে, আরও এক আশ্চর্যজনক বিষয় হল, গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ রাসেল প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মাঝে মাঝে মধ্যরাতে বিভিন্ন রেস্তোরায় বন্ধুদের সাথে আনন্দ করতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি, তিনি পাওনাদারদের সঙ্গে কোনরূপ সাক্ষাৎ করতে চান না বলে জানা গেছে। তার এই আচরণ একদিকে যেমন তার ওপর ক্ষোভ বাড়াচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে ইভ্যালির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাওনা ফেরত না পাওয়ার কারণে হতাশ মানুষের মধ্যে আরও উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।
এটি সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। সাধারণ জনগণ, পাওনাদার এবং বিশেষজ্ঞরা একযোগে মোহাম্মদ রাসেলের এই আচরণের নিন্দা করেছেন এবং সরকারের কাছে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পাওনাদাররা অভিযোগ করেছেন যে, রাসেল তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার বদলে মজা করতে ব্যস্ত রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও আইন-প্রণেতাদের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
এমনকি, কিছু সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে মোহাম্মদ রাসেল নিজের ব্যবসায়িক ক্ষতি কিংবা ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে উপেক্ষা করে মনোরঞ্জনে ব্যস্ত। তার এমন কর্মকাণ্ডের ফলে জনগণের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, এবং তার ভবিষ্যতের জন্য এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। পাওনাদারদের দাবি, মোহাম্মদ রাসেল যেন দ্রুত আইন অনুযায়ী শাস্তি পান এবং জনগণের টাকাগুলি দ্রুত ফেরত দেওয়া হয়।
এখন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পাওনাদাররা সরকারের কাছে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তারা চান, যাতে রাসেল শাস্তি পান এবং তাদের পাওনা টাকা শীঘ্রই ফেরত দেওয়া হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নজর রেখেছে, তবে এখনও কোন নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পাওনাদারদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে তড়িৎ পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, যার ফলস্বরূপ সরকারকে জনগণের ক্ষোভ মোকাবিলা করতে হতে পারে।
এ বিষয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে জানা গেছে, পাওনাদাররা কেবল তাদের পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যই নয়, বরং দেশের আইন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যও সরকারের কাছে আশু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন, সরকার দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে এবং জনগণের কল্যাণে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এখন সকলের দৃষ্টি সরকারের দিকে, তারা কী পদক্ষেপ নেবে এবং এই পরিস্থিতি থেকে জনগণের ক্ষোভ নিরসন করতে সক্ষম হবে কিনা, তা শুধু সময়ই বলে দেবে।
ধন্যবাদ। আমাদের কষ্ট গুলো সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ,ফলো দিয়ে সাথে থাকুন