Wednesday, June 18, 2025

এবছর রবি মৌসুমে ভোলায় ডালের বাম্পার ফলন

Date:


সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভোলা জেলায় চলতি রবি মৌসুমে মুগ ও ফেলন ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, রোগ-বালাই ও পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা স্বস্তিতে ডাল চাষ করেছেন।

বর্তমানে চলছে ডাল সংগ্রহ, শুকানো ও বীজ সংরক্ষণের কাজ। ডালের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শের মাধ্যমে তাদের সদস্য কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে অনেক কৃষক আধুনিক পদ্ধতিতে ডাল চাষে উৎসাহী হয়েছেন এবং ভালো ফলন পেয়েছেন।


দৌলতখান উপজেলার কৃষক রাসেল জানান, “এই বছর ডালের ফলন ভালো হয়েছে। যদি ভালো দাম পাই, তাহলে আগামী বছরও ডাল চাষ করব।” উত্তর জয়নগরের কৃষক শেখ ফরিদ বলেন, “আগে ছোট ডাল করতাম, লাভ হত না। এবার অফিস থেকে বড় জাতের ডাল দিয়েছে, সেটা করে আমরা লাভবান হয়েছি। সেই ডালের বীজ রেখে দিয়েছি, আগামী বছর সেটা দিয়েই চাষ করব।


স্থানীয় কৃষাণী আসিয়া বেগম জানান, “এ বছর ডাল ভালো হয়েছে। তুলে শুকিয়ে রাখছি। আগামী বছর এই ডাল দিয়েই আবার চাষ করব।” একই এলাকার বিলকিস বেগম বলেন, “নিজের জমিতে চাষ করলে পুরো ফসল নিজেই পাই। আর অন্যের জমিতে কাজ করলে দশ ভাগে এক ভাগ বা কখনো বারো ভাগে এক ভাগ ডাল পাই।” কৃষিবিদ মুরাদ চেধুরী জানান, তাদের মাঠ কর্মকর্তাগন সরসরি মাঠে গিয়ে কৃষকদের ডাল উৎপাদনের কলা কৌশল শিখিয়ে দিয়েছেন। এবং প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে তাদেও আগ্রহী করে তুলেছেন। ফলে চাষীরা ডাল জাতীয় ফশল উৎপাদনে উৎসাহ নিয়ে মাঠে নেমেছেন এবং ভালো ফলন পেয়েছেন।


ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ খায়রুল ইসলাম মল্লিক জানান, “এই রবি মৌসুমে ভোলা জেলায় ২৮,৬৫৫ হেক্টর জমিতে ডাল চাষ হয়েছে। উন্নত জাতের মধ্যে বারি মুগ-৬ সবচেয়ে জনপ্রিয়, যা প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জমিতে ব্যবহার হয়েছে। এছাড়া কিছু জায়গায় বিনা মুগ-৮ ও বারি মুগ-৭ চাষ হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ১.৪ মেট্রিক টনের মতো হতে পারে।

যদিও সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে যদি তা আরও আগে হতো, ফলন আরও ভালো হতে পারত। মাঠ পরিদর্শনে দেখা গেছে, অধিকাংশ কৃষক একাধিকবার ফসল তুলেছেন। দামও সন্তোষজনক, প্রতি কেজি মুগ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, এবং বড় দানা হলে ১০৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি আগামীতে ভোলায় ডালের চাষ আরও বাড়িয়ে ৩০ হাজার হেক্টর বা তার বেশি করা সম্ভব হবে। কৃষক যেন আরও লাভবান হয়, সে লক্ষ্যে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে মার্কেট লিংকেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

দিগদাইড় উচ্চ  বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন সারোয়ার আলম

মজিবুল হক চুন্নু, তাড়াইল উপজেলা প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের জেলা তাড়াইল উপজেলা ৬...

ভোটের ২ মাস আগে তফশিল ঘোষণা হবে-সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ.এম.এম নাসির উদ্দিন বলেন, ভোটের...

১৬ জুন: সংবাদপত্রে কালো দিবস-মুহম্মদ মনজুর হোসেন।

গণমাধ্যম হত্যা ও বাকস্বাধীনতা হরণের এক কলঙ্কিত দিন আগামীকাল, ১৬...

জেএসএস’র উদ্যোগে ঈদ পূর্ণমিলনী ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম):জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লোহাগাড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে এক...