বিএনএসঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী প্রতিবছর পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে ‘বৈসাবি’ উৎসবের মাধ্যমে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং ঐতিহ্য এই উৎসবের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
বৈসাবি উৎসবের মূল কাঠামো
বৈসাবি নামটি তিনটি উৎসবের আদ্যক্ষর নিয়ে গঠিত—
- চাকমাদের বিঝু
- মারমাদের সাংগ্রাই
- ত্রিপুরাদের বৈসু
উৎসবের আকর্ষণীয় দিকগুলো
১. ফুলবিঝু: ১২ এপ্রিল ভোরে ফুল সংগ্রহ ও ঘর সাজানোর মাধ্যমে চাকমা সম্প্রদায়ের ফুলবিঝু শুরু হয়। ২. পানিখেলা: মারমাদের পানির ছিটানোর উৎসব, যা উৎসবে প্রাণবন্ত আনন্দ যোগ করে। ৩. মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো: বৌদ্ধ মূর্তি স্নান ও হাজার প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
খাবারের বিশেষ আয়োজন
উৎসবে পাহাড়ি ঘরে ঘরে তৈরি হয়:
- পাচন: ২০-৩০ ধরনের সবজি দিয়ে রান্না একটি ঐতিহ্যবাহী তরকারি।
- পিঠা, পোলাও ও সেমাই: বিশেষ আনন্দঘন মেনুতে সুস্বাদু খাবারের আয়োজন।
বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসব
- চাকমাদের বিঝু: ফুলবিঝু, মূলবিঝু এবং গোজ্যেপোজ্যে দিন—তিনদিনে পালিত।
- ত্রিপুরাদের বৈসু: হারি বৈসু, বৈসুমা এবং বিসি কতাল নামে তিনদিনব্যাপী।
- তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু: সাংগু নদীতে পূজা ও ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলার আয়োজন।
- ম্রো সম্প্রদায়ের চাংক্রান: পানিখেলা, তৈলাক্ত বাঁশে আরোহণ, এবং লাঠি প্রতিযোগিতা।
রাজধানীতে বৈসাবি
ঢাকায় পাহাড়ি-বাঙালির বৈসাবি উদযাপন বেইলি রোড থেকে রমনা পার্কের লেকে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উৎসবের সম্পর্ক
বৈসাবি উৎসবের শিকড় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস এবং কম্বোডিয়ায় একই সময়ে ‘সংক্রান’ নামে নববর্ষ উদযাপন হয়।