সাংবাদিকতা—এই শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কলম, ক্যামেরা আর খবরের কাগজের ছবি। কিন্তু বাস্তবতা কি এতটাই সরল? বিশেষ করে যখন সাংবাদিকতা নিজেই বিপদের মুখোমুখি দাঁড়ায়, তখন এই পেশাটি শুধুই পেশা থাকে না—পরিণত হয় প্রতিবাদের ভাষায়।
বিশ্বের নানা প্রান্তে, এমনকি আমাদের দেশেও, সাংবাদিকরা প্রায়ই হুমকি, নিপীড়ন, এবং সেন্সরশিপের শিকার হন। সত্য প্রকাশ করাই যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে সেই সত্যই হয়ে দাঁড়ায় তাদের জীবনের ঝুঁকি। কেউ নিখোঁজ হন, কেউ হয়রানির শিকার হন, আবার কেউ প্রাণ হারান শুধুমাত্র নির্ভীকভাবে প্রশ্ন তোলার কারণে।
এখানেই প্রশ্ন ওঠে—সাংবাদিকতা কি নিছক একটি চাকরি? নাকি এটি একটি নৈতিক অবস্থান, যেখানে সত্যকে আঁকড়ে ধরাই প্রধান কর্তব্য? একজন সাংবাদিক যখন কোনো দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন, অন্যায়ের বিপক্ষে কলম ধরেন বা ক্ষমতার অপব্যবহার তুলে ধরেন, তখন তিনি আর কেবল সংবাদকর্মী নন—তিনি একপ্রকার আন্দোলনের প্রতিনিধি।
তবে প্রতিবাদ মানেই রাজনৈতিক প্রচার নয়। সাংবাদিকতার প্রতিবাদ হল নিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। এটি একটি শান্তিপূর্ণ, তথ্যমূলক প্রতিরোধ যা সমাজকে জাগিয়ে তোলে এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।
তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, যখন সত্যকে আড়াল করার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে, তখন সাংবাদিকতা আর কেবল পেশা হিসেবে দেখলে চলে না। এটি এক ধরণের সামাজিক দায়িত্ব, যেখানে প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি প্রতিবেদন, প্রতিটি অনুসন্ধান এক একটি প্রতিবাদ—সত্যের পক্ষে, মানুষের পক্ষে।
শেষ কথা—
সাংবাদিকতা যদি বিপদের মাঝেও সত্য তুলে ধরতে পারে, তবে সেটিই তার সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। আর সেই প্রতিবাদই আগামী সমাজের বিবেককে জাগ্রত রাখতে সাহায্য করবে।
লেখকঃ মুহম্মদ মনজুর হোসেন
চেয়ারম্যানঃ বাংলাদেশ নিউজ সিন্ডিকেট
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ দৈনিক সমতল।