Wednesday, October 8, 2025

বিশেষ পদ্ধতিতে দেশী মুরগী পালনে স্বাবলম্বী হচ্ছে নারীরা।

Date:

সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভোলায় বিশেষ আবাসন নিশ্চিত করে খাচায় দেশি মুরগী পালনের আগ্রহ বাড়ছে নারীদের
ভোলায় বিশেষ আবাসন নিশ্চিত করে আধুনিক পদ্বতিতে খাচায় দেশি মুরগী পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগ্রহ বাড়ছে বিভিন্ন নারীদের। আধুনিক এ বিশেষ পদ্ধতিতে দেশি মুরগী পালনে বন্য প্রাণীর হাত থেকে যেমনি মুরগী ও তার বাচ্চা নিরাপদ থাকে, বাড়ছে ডিমের পরিমান তেমনি রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণে পাচ্ছে বিভিন্ন সুবিধা ও পরামর্শ। ফলে বিলুপ্ত প্রায় দেশি মুরগী পালনে নারীদের আগ্রহ বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে অনেক নারী সফল হয়ে বড় খামার করার স্বপ্ন বুনছে। ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার প্রায় পাঁচশত নারী এ বিশেষ খাচায দেশি মুরগী পালন করছে। তাদের দেখা দেখি আরও তিনশত নারী বিশেষ পদ্ধতিতে মুরগী পালন শুরু করেছে। বিশেষ আবাসন পদ্ধতিতে দেশি মুরগি পালনে মুরগী ও তার বাচ্চা বন্য প্রানীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। তেমনি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই পুনরায় ডিম দিচ্ছে মুরগী। পাশাপাশি রোগবালাই নিয়ন্ত্রণের সুবিধা নিশ্চিত করছে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্মীরা। এই পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের খাঁচায় মুরগীর বাচ্চাগুলোকে প্রথম দুই মাস রাখা হয়, যেখানে তাদের ইনটেনসিভ ফিডিং ও নির্দিষ্ট সময় অন্তর টিকা প্রদান করা হয়। ফলে বাচ্চাগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং নির্দিষ্ট বয়সে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর কৃষি ও প্রানী সম্পদ ইউনিটের আওতায় বিশেষ আবাসন নিশ্চিত করে দেশী মুরগী পালন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস)।বিশেষ আবাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মা মুরগীকে বাচ্চা থেকে আলাদা রাখা হয়, যার ফলে মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই মা মুরগী আবার ডিম উৎপাদনে ফিরে আসে। ফলে একই সময়ে একজন নারী অধিক পরিমাণে ডিম ও মুরগীর মাংস উৎপাদন করতে সক্ষম হন, যা তাকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করে। ফলে এটি ভোলার প্রকল্প এলাকার গ্রামাঞ্চলের খামারীদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। বর্তমানে ২০টি ক্লাস্টার গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে আধুনিক সুপরিকল্পিতভাবে দেশি মুরগী লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রকল্পভুক্ত খামারি পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ইয়ানুর বেগম জানান, এই পদ্ধতি তাদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হয়ে উঠছে। আগে মুরগীর বাচ্চা অনেক বন্য প্রাণীর শিকার হতো, অথবা রোগবালাইয়ের কারণে মারা যেত। কিন্তু নতুন এই পদ্ধতিতে সুরক্ষিত খাঁচায় লালন-পালনের ফলে মৃত্যুহার কমেছে এবং উৎপাদন বেড়েছে। বন্য প্রাণীও নিতে পাড়ছে না। ফলে আশেপাশের গ্রামগুলোতেও এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার উপপরিচালক অরুন কুমার সিনহা জানান, দেশি মুরগীর জাতকে ধরে রাখা ও নারীদের বাড়তি আযয়র জন্যই এ পদ্ধতি নেয়া হয়েছে যাতে গৃহিনী/ নারীরা আত্বনির্ভরশিল হতে পারে। মুরগি ও ডিম বিক্রি করে বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দেয়াই আমাদের লক্ষ। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, যদি এই মডেল সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তবে এটি দেশি মুরগি পালনের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। সরকারের সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হলে দেশি মুরগীর খামারিরা আরও লাভবান হবেন, যা দেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে। গ্রামাঞ্চলের এই বিশেষ মডেলের মাধ্যমে খামারিরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি স্থানীয় পর্যায়ে ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের শপথ ও পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত

বিএনএসঃ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (শনিবার) সকাল ১০ টায় দক্ষিণ এশিয়ার...

ফেরোশাস ফরটিন,সামরিক বাহিনীর সৈনিকদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত

মোঃ শহিদুল ইসলামঃ গতকাল ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রোজ শুক্রবার, বেলা...

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মোঃ রাব্বী মোল্ল‘র বানী

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বানী “মানবতার মুক্তির...

কালের নতুন সংবাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

মোঃ শহিদুল ইসলাম:কালের নতুন সংবাদ'র ১০ম বছরে পদার্পনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী...