পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
বংশ পরম্পরায় যারা জেলে, মাছ শিকার ছাড়া যাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই, সেই প্রকৃত জেলেদের অনেকেই এখনো সরকারি তালিকায় নিবন্ধিত হতে পারেননি। নিবন্ধন না lথাকায় কোনো খাদ্য সহায়তাও তারা পাননি। আবার কার্ডধারী হলেও টাকা না দিতে পারলে তাদের নাম তালিকায় থাকে না। ফলে পেটের দায়ে মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে নেমে আটক কিংবা নির্যাতনের শিকার হন তারা। হারিয়ে ফেলেন জাল ও নৌকা। গত ১৫ বছর ধরে এমনটাই চলেছে। এমনকি ৫ আগষ্টের পর এখনো এমন দৃশ্য বাংলাদেশের কোথায়ও কোথাও দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশন, জিয়ানগর উপজেলা কমিটির পরিচিতি ও সাধারণ সভার প্রধান অতিথি জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাসুদ সাঈদী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জেলেদের সঠিক কোনো তালিকা অতীতে তৈরি করা হয়নি। অতীতে আওয়ামী লীগ ও তাদের বিনা ভোটের এমপি, চেয়াম্যানেরা তাদের নিকট আত্মীয় ও নিজেদের লোকদের নিয়ে জেলে তালিকা তৈরি করেছিল। এতে বিভিন্ন পেশার মানুষ, সচ্ছল ব্যক্তিরা জেলে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগের করা অতীতের এসব তালিকা বাতিল করে প্রকৃত জেলেদেরকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। পরিচিতি ও সাধারণ সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, জেলে ও মৎস্য চাষীদের অভুক্ত রেখে বা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জিত হবেনা। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ না ধরার জন্য সরকারের যে আইন আছে সে আইন মেনে জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখে। এই সময় নদী ও সাগর উপকূলবর্তী ইলিশ ধরা জেলেরা পড়ে আর্থিক সঙ্কটে। এ সঙ্কট উত্তরণে সরকার তাদের জন্য বরাদ্দ করেছে চাল। কিন্তু সিংহভাগ জেলেরাই থাকছে এ সুবিধার বাইরে। আবার পরিমাণও কম। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ৪০ কেজির সুপারিশ করলেও মিলছে অর্ধেক অর্থাৎ ২০ কেজি। তাও তারা নিয়মমাফিক পাচ্ছে না বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। এই অবস্থা পরিত্রানে সরকারকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, মৎস্যজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকে তাহলে তাদের হক থেকে তাদেরকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবেনা এবং আগামী দিনে সংগঠনের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত এ সময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ কাওসার শেখ ও পরিচালনা করেন মোঃ জামাল হোসাইন। প্রধান আলোচক ছিলেন জিয়ানগর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান বিন-মোহাম্মদ-আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ফেডারেশন জিয়ানগর উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা আলী হোসাইন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম। সভায় মৎস্যজীবীরা তাদের জীবন-জীবিকা পরিচালনায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলে ধরেন। তাঁদের কার্ড থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে চাল, ডাল পায়নি। তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে তাদের ওপর নানামুখী অন্যায়, অত্যাচার, মিথ্যে মামলা এবং অনিয়ম চলেছে। অনুষ্ঠানে বক্তারা মৎস্যজীবীদের সমস্যা, দাবি এবং তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
মৎস্য চাষীদের অভুক্ত রেখে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জিত হবেনা
Date: