মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার তপা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
ঢাকাস্থ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব আবু নুর মোঃ শামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগপত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অভিযোগে বলা হয়, তপা বিশ্বাস ১০৪ নং নয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র মেরামতের জন্য ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। উৎকোচ না পাওয়ায় প্রধান শিক্ষক জেসমিন বেগমকে হয়রানি করা হয় এবং কাজ সমাপ্তির প্রত্যয়ন প্রদান করা হয়নি।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে:
সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে পরিবেশ অস্থির করা,
অফিসে অমার্জিত পোশাক পরে উপস্থিত হওয়া এবং পুরুষসুলভ আচরণ,
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনা অবহেলা করা,
ক্লাস্টারের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পোশাক কেনার কথা বলে প্রায় ২৫ লাখ টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ করা, যার মধ্যে মাত্র ২৪ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়,
রেকর্ড রেজিস্টার ও ল্যাপটপ নিয়ে গিয়ে ফেরত না দেওয়া,
প্রধান শিক্ষকদের বই কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা এবং সাংবাদিককে ভয়ভীতি দেখানো।
উল্লেখ্য, এর আগেও পিরোজপুরে কর্মরত অবস্থায় তপা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল বলে বিভিন্ন অনলাইন সূত্রে জানা গেছে।
মাদারীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব সাইফুল ইসলাম বলেন, “তপা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি নিয়মশৃঙ্খলা না মেনে নিজের মতো করে চলাফেরা করেন, যা রাজৈরের শিক্ষাব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(ঘ) অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক লিখিত জবাব প্রদানের নির্দেশ দেয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি।
ফলে রাজৈর উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা এবং অফিসের সুনাম রক্ষার্থে তপা বিশ্বাসকে জেলার বাইরে বদলি ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়।