Tuesday, April 29, 2025

সরকারি কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে চাঁদা আদায়; দুর্ধর্ষ চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

Date:

বিএনএস নিউজ ডেস্কঃ সরকারি কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়; দুর্ধর্ষ চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার ও ১৫ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করেছে ডিএমপি

রাজধানীর ভাটারা এলাকায় এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে আটক, মারধর ও জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুর্ধর্ষ এক চক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভাটারা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। নাজমুন নাহার সুখী (২৮) ২। কামরুন নাহার আঁখি (৩২) ৩। রুমানা ইসলাম স্মৃতি (৫০) ও ৪। মোঃ সাফাত ইসলাম লিংকন (২৫)।

শনিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি.) রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকা হতে ০২:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত ভাটারার বসুমতি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট হতে আদায়কৃত চাঁদার ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ভাটারা থানা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম উচ্চপদস্থ একজন সরকারি কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃত কামরুন নাহার আঁখি তার পূর্ব পরিচিত। ভিকটিমের নিকট হতে বিভিন্ন প্রয়োজনে গত ৩-৪ মাসে ৫ লাখ টাকা ধার নেয় আঁখি। পরবর্তীতে ভিকটিম টাকা ফেরত চাইলে আঁখি টালবাহানা শুরু করে। গত ১৮ এপ্রিল ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আসেন ভিকটিম। পরদিন (১৯ এপ্রিল) বিকেলে তার আরেক পূর্ব পরিচিত নাজমুন নাহার তাকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভার কেয়ার হাসপাতালের গেট থেকে ছোলমাইদ উত্তরপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গ্রেফতারকৃত চারজনসহ অজ্ঞাতনামা একজন ভিকটিমকে আটক করে। সেখানে সাফাত ইসলাম বালিশ দিয়ে তার মুখ চেপে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে এবং অন্যরা তার হাত-পা বেঁধে মারধর করে। অত:পর তারা ভিকটিমের নিকট এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ৬০ লক্ষ ২৩ হাজার ৮০ টাকা সংগ্রহ করে তাদেরকে দেন। এরপর তারা ভিকটিমের নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তাকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।

থানা সূত্রে আরো জানা যায়, মামলা রুজুর পর ভাটারা থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রটির সদস্যদের চিহ্নিত ও তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে শনিবার রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকা হতে ০২:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত ভাটারা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে আদায়কৃত চাঁদার ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সমাজের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের টার্গেট করে তাদের ব্ল্যাকমেইলের জাল বিস্তার করে। প্রথমে তারা তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। সখ্যতার এক পর্যায়ে ভিকটিমদের একটি বাসায় নিয়ে আসে। সেখানে আটক, নির্মম মারধর, চাঁদা আদায় এবং নগ্ন ভিডিও ধারণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করে থাকে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। চক্রের পলাতক এক সদস্যকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সকল ধরনের অপরাধ দমনে ডিএমপি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নগরবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনসাধারণকে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার এবং যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করতে আহ্বান জানাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এলজিইডিতে দুদকের অভিযান

বিএনএসঃ টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডিতে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন না করেই...

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পরও নারী ও শিশু নির্যাতন অব্যাহত

বিএনএস নিউজ ডেস্কঃ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র বৈষম্য বিরোধী...

শাহী মসজিদ কমপ্লেক্স মোহাম্মাদিয়া হা: মাদ্রাসা, প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার মোঃ শহিদুল ইসলাম: ঢকা দক্ষিণগাঁও শাহী মসজিদ কমপ্লেক্সের...

মৎস্য চাষীদের অভুক্ত রেখে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জিত হবেনা

পিরোজপুর প্রতিনিধিঃবংশ পরম্পরায় যারা জেলে, মাছ শিকার ছাড়া যাদের...