লেখা: মুহম্মদ মনজুর হোসেন।
বিচার না পেয়ে হতাশ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মুখ থুবড়ে পড়া, বা ন্যায্য অধিকার আদায়ে বারবার দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরে যখন মানুষ আশাহত—তখন তাদের একমাত্র শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ায় গণমাধ্যম।
আজকের বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ নানা সমস্যায় জর্জরিত—অপরাধ, দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রশাসনিক জটিলতা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা মৌলিক অধিকার—সবকিছুতেই কোথাও না কোথাও অভাব পরিলক্ষিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক সমাধান পেতে মানুষকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়, কিংবা হয়তো মেলেই না কাঙ্ক্ষিত সেবা।
এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও গণমাধ্যমই একমাত্র শক্তি, যেখানে মানুষ নিজের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দিতে পারে। কোনো গরিব পরিবার যদি ভূমি দস্যুর কবলে পড়ে, কোনো রোগী যদি হাসপাতালে অবহেলায় মারা যায়, বা কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী যদি আর্থিক সংকটে ঝরে পড়ে—গণমাধ্যমেই সেই গল্প উঠে আসে, দেশবাসী তা জানতে পারে। অনেক সময় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে, দায়ীদের বিচার হয়, কোনো পরিবার পায় সাহায্যের হাত।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বড় বড় অন্যায়ের বিরুদ্ধেই গণমাধ্যমের রিপোর্টিং-ই এনে দিয়েছে ন্যায়বিচার। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার মুখোশ উন্মোচন হোক বা নিপীড়িতের আকুতি—গণমাধ্যমই তুলে ধরছে সাহসের সঙ্গে।
তবে এটি শুধু দায়িত্ব নয়, এক ধরনের সামাজিক অঙ্গীকারও। গণমাধ্যম যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তবে সাধারণ মানুষের এই শেষ ভরসার জায়গাটি আরও দৃঢ় হবে।
তাই প্রয়োজন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা, পেশাদারিত্ব বজায় রাখা এবং সর্বস্তরের মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা। কেননা গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ হলে, ন্যায়বিচার পাওয়ার শেষ আশাটুকুও নিভে যাবে।
লেখক: মুহম্মদ মনজুর হোসেন
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ দৈনিক সমতল
চেয়ারম্যানঃ বাংলাদেশ নিউজ সিন্ডিকেট -বিএনএস