বিএনএস নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই জনগণের নির্বাচিত সংসদ থেকে আসা উচিত। বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে করিডর দেওয়ার বিষয়ে জনগণ বা রাজনৈতিক দলগুলোকে কিছু জানায়নি। সিদ্ধান্ত জনগণের প্রতিনিধি সংসদ থেকেই আসতে হবে। জনগণই এই দেশের মালিক এবং তাদের মতামতই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, দেশে সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের কথা সেখানে নেই। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার ছাড়া জনগণের কথা রাষ্ট্রে পৌঁছায় না। অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু অংশ রাজনৈতিক ঐক্যকে বিভক্ত করতে চায়। তবে তিনি সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
তারেক রহমান বলেন, “স্বৈরাচার যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে, সেজন্য জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা জরুরি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একক ক্ষমতার ইচ্ছা যেন ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি না করে।”
তিনি বলেন, “১৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় আট কোটি শ্রমজীবী। তাদের অধিকার নিশ্চিত না করে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ সম্ভব নয়।”
এর আগে, ‘মে দিবস দিচ্ছে ডাক, বৈষম্য নিপাত যাক’ স্লোগানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশ শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ সমাবেশে হাজারো শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। লাল টুপি ও গেঞ্জি পরে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের শ্লোগানে মুখরিত হয় নয়াপল্টন এলাকা।
সমাবেশে ‘অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন চাই’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও, লড়াই করো’ ইত্যাদি স্লোগানও ওঠে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
শ্রমিক দলের ১২ দফা দাবি: ১. অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন
২. ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার
৩. সব প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার
৪. বন্ধ শিল্প চালু ও নতুন শিল্প স্থাপন
৫. আউটসোর্সিং বন্ধ করে স্থায়ী পদ সৃষ্টি
৬. গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার
৭. শ্রমিক হত্যার বিচার ও নির্যাতন বন্ধ
৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা
৯. জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা
১০. বৈষম্যহীন জাতীয় পে-স্কেল ও মজুরি হার
১১. কালাকানুন বাতিল
১২. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো