কামরুন্নাহার ফৌজদারি মামলার বিচারের জন্য ফিট নন : সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ

বিএনএস নিউজ ডেস্কঃ

রাজধানী ঢাকা বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায় দেওয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর সাবেক বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার ফৌজদারি মামলার বিচারের জন্য ফিট নন বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা জব্দ করে দেওয়া রায়ে এমন মন্তব্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। গত ২২ নভেম্বর দেওয়া রায়ের ৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ের অনুলিপি বিচারক কামরুন্নাহারের এসিআর ফাইলেও সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে। রাষ্ট্র বনাম আসলাম সিকদার নামের মামলায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, ‌‘বিচারক কামরুন্নাহার অসৎ উদ্দেশ্যে আসামিকে জামিন দিয়েছেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রেকর্ড দেখা থেকে এড়িয়ে গেছেন।

সর্বোচ্চ আদালত আরও বলেছেন, ‘আসলাম শিকদারকে জামিন দিয়ে কামরুন্নাহার সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ ভঙ্গ করেছেন। তাই সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার ফৌজদারি ক্ষমতা সিজ করা হলো। সুতরাং, কামরুন্নাহার বাংলাদেশের কোনো আদালতের ক্রিমিনাল ম্যাটার পরিচালনা করতে পারবেন না। সংবিধা এর ১০৪ অনুচ্ছদে বলা হয়েছে যে, আপিল বিভাগের নিকট বিচারাধীন যে কোনো মামলা বা বিষয়ে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় হইতে পারে, উক্ত বিভাগ সেইরূপ নির্দেশ, আদেশ, ডিক্রি জারি করিতে পারিবেন।

জানা গেছে, ধর্ষণ মামলায় স্থগিতাদেশ থাকার পরও আসামি আসলাম সিকদারকে জামিন দেওয়ায় বিচারক কামরুন্নাহারকে গত বছরের ১২ মার্চ তলব করেন আপিল বিভাগ। ২ এপ্রিল হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তবে করোনার পর এই মামলাটি আর কার্যতালিকায় আসেনি। এরপর মামলাটি গত ১৫ নভেম্বর কার্যতালিকায় আসে। ওইদিন এ বিষয়ে আপিল শুনানি হয়। একইভাবে ২২ নভেম্বর মামলাটি আপিল বিভাগের তালিকায় আসে। ওইদিন আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে বিচারক কামরুন্নাহার হাজির হন। তখন আপিল বিভাগ ওই বিচারককে রেখে আইনজীবীদের বিচার কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে শুনানি শুরু করেন। সাড়ে ৯টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত আর কেউই ওই কক্ষে ঢুকতে পারেননি। দীর্ঘসময় পর বিচারক কামরুন্নাহার কোর্টের ভিন্ন একটি দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়।