নারায়ণগঞ্জ হাসেম ফুড লিঃ কারখানায় আগুন ৫২ জনের মৃত্যু।

বিএনএসঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে খাদ্যসামগ্রী তৈরির জন্য মজুদ ছিল প্রচুর ভোজ্যতেল। একই সঙ্গে ভবনটিতে ছিল অসংখ্য প্লাস্টিক বোতল ও কন্টিনার, কেমিক্যাল, কার্টনসহ প্রচুর দাহ্য পদার্থ। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন।

তিনি জানান, আগুন নেভানোর পর আবার আগুন জ্বলে উঠছিল। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, ওই কারখানার দুটি ফ্লোরের পাঁচ ও ছয়তলায় আগুন ড্যাম্পিংয়ের কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।

ভবন থেকে এপর্যন্ত ৫২টি লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ভবনটিতে ড্যাম্পিংয়ের কাজ চলছে। ডাম্পিং শেষে সেখানে আরও লাশ রয়েছে কি না, সেটি তল্লাশি চালানো হবে।

ছয় তলা ভবনের ছাদে ওঠার জন্য দুটি সিঁড়ি রয়েছে, যার একটির ছাদের দরজা বন্ধ ছিল বলে এর মধ্যে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পাওয়া সজীব গ্রুপর ওই কারখানার একাধিক কর্মী জানান, সেথাসে জুস, চকলেট, নসিলা, লিচু, সেমাই, চানাচুর ও বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি হতো। ভবনটির চার তলা ও পাঁচ তলায় চানাচুর সেমাই ভাজার কাজ চলত। সেখানে প্রচুর ভোজ্য তেল ব্যবহার করা হতো, যার জন্য ফ্লোর সব সময় গরম থাকত।

ঘটনাস্থলে কর্মরত ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন বলেন, ভবনটি চারতলার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একসঙ্গে অন্তত ২৫টি লাশ পাওয়া গেছে। ওই ওই ফ্লোরে এক ধরনের নসিলা তৈরি হতো, যা তৈরিতে ভোজ্য তেল ব্যবহার করা হতো। ওই ভোজ্যতেলই মূলত জ্বালানি হিসেবে এতক্ষণ ধরে জ্বলছে। এছাড়া প্রচুর প্লাস্টিক ও কাগজের কার্টুন সেখানে ছিল।

তিনি বলেন, ভোজ্য তেলপাইপ লাইনের মাধ্যমে পুরো ফ্লোরে বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই পাইপ ফেটে ভোজ্যতেল মেঝেতে পড়ে সাংঘাতিক পিচ্ছিল হয়ে রয়েছে। চারতলায় কাজ করতে গিয়ে তিনিসহ ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকজন কর্মী পিছলে পড়ে আহতও হয়েছেন।

কারখানার ব্যবস্থাপক কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁদের ওই ভবনের কারখানায় ২০০ শ্রমিক কাজ করতেন। ওই ভবন সেন্ট্রাল গোডাউন হিসেবে তাঁরা ব্যবহার করতেন। ওই ভবনে বিভিন্ন জুসের ফ্লেভার, রোল, ফয়েল প্যাকেটসহ বিভিন্ন মালামাল ছিল। আগুন লাগার পর কত শ্রমিক আটকা পড়েছেন, তা তাঁরা জানেন না। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে তারা ধারণা।