হবিগঞ্জ জমে উঠেছে পশুর হাট, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে হবিগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট। তবে পশুর হাটগুলো মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল শুক্রবার (১৬ জুলাই) হবিগঞ্জ শহরের পৌর পশুহাটে ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের কয়েক হাজার গরু উঠে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মুল বাজার, খোয়াই নদী পাড়সহ কামড়াপুর বাইপাস সড়কের মৌড় পর্যন্ত কোরবানির পশু উঠেছে। যার ফলে পশু বিক্রেতা ও ক্রেতাদের আগমনে বাজারে গাদাগাদি করে চলাচল করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় চলাচলে অধিকাংশরাই মাস্ক পড়ছেন না। এতে করোনার ঝুকিঁর আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারে কেনাবেচার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। 

গরু ক্রয় করতে আসা রিচি গ্রামের বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মুকুল জানান, বাজারে পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে করোনার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। কেউ সামাজিক দূরত্ব যেমন বজায় রাখছেন না। তেমনি স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক ব্যবহার করছেন না।

তিনি বাজারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়াও তিনি জানান, অন্যান্য বছরে এবার গরু দাম কম হলেও এ বাজারের গরুর পাইকাররা দাম ছাড়ছেন না। পাইকাররা বলছেন করোনার কারণে বাহির থেকে গরু না আসায় এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম বেশি। 

এ ব্যাপারে গজারিয়াকান্দি গ্রামের গরুর পাইকারী ব্যবসায়ী মোঃ জবেদ আলী জানান, গ্রাম অঞ্চলে যারা গরুর লালনপালন করেন তাদের কাছ থেকে যখন আমরা গরু ক্রয় করতে যাই তখন তারা অতিরিক্ত দাম চান। গরুর দাম উপযুক্ত না হলে তারা গরুগুলো বিক্রি করতে চান না। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে টার্গেটের চেয়ে বেশি দামে গরু ক্রয় করতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে নিয়ে আসার পর ক্রেতারা আমরা যে দামে ক্রয় করেছি এর চেয়ে কম দাম বলছেন। এ অবস্থায় আমাদের অনেক গরু ক্রয়কৃত দামের চেয়ে কমে বিক্রয় করতে হচ্ছে। এতে আমরা পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। 

এদিকে, গরুর খামারিরা দাবি করেছেন- বড় সাইজের গরুগুলো লালনপালন করতে যে খরচ হয়েছে সেই হিসাবে বর্তমান বাজারে ক্রেতারা গরুর দাম অনেক কম বলছেন। ওই দামে গরু বিক্রি করলে তারা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়াও করোনার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন বড় সাইজের গরু কোরবানি দিতে আগ্রহ নয়। 

এ ব্যাপারে বাজার ইজারাদার মিজানুর রহমান জানান, গতকাল বাজারে বড় সাইজের অনেক গরু বিক্রি হয়েছে। তবে মাঝারী ও ছোট সাইজের গরু বেশি বিক্রি হয়ে হয়েছে। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বার বার মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু তারা তা মানছেন না। এছাড়া অনেকেই মাস্ক পড়ছেন না। আমরা বার বার মাস্ক পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু ক্রেতা ও বিক্রেতারা তা শুনছেন না। 

এদিকে সামনের বাজারগুলোতে জাল নোট সনাক্ত করণের মেশিন বসানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতে গরু ক্রয় বিক্রয় হয় এই দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তবে অনলাইনে গরু বেচাকেনা শুরু হলেও হবিগঞ্জের ক্রেতা অনলাইনে পশু ক্রয় করতে আগ্রহী নন। ক্রেতারা জানিয়েছেন, অনলাইনে যে পশুর ছবি দেখানো হয়, পরবর্তীতে সরাসরি গিয়ে ছবির সাথে এর মিল পাওয়া যায় না।