রোহিঙ্গাদের জন্য ঈদে ২ শতাধিক গরু ভাসানচরের

অনলাইন ডেস্কঃ

সম্প্রতি কয়েক দফায় সরকার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে। এবার সেই রোহিঙ্গাদের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগ করতে সেখানেই দুই শতাধিক গরু কোরবানি দেওয়া হবে। 

এতে সেখানকার রোহিঙ্গা বাসিন্দারা তাদের প্রথম ঈদুল আজহা আনন্দেই কাটবে বলে জানান। জানা যায়, এবারের ঈদে বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া প্রায় দুই শতাধিক গরু ভাসানচরে আনা হচ্ছে। এগুলো কোরবানির পরে সেখানকার বাসিন্দাদের মাজে ভাগ করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ভাসানচরের আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমডোর এম রাশেদ সাত্তার বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো কয়েকটি দেশি-বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে রোহিঙ্গাদের জন্য দুই শতাধিক গরু দিয়ে কোরবানির ঈদের আয়োজন করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার (১৬ জুলাই) ইসলামিক রিলিফের দেওয়া ১৩৫টি গরু ভাসানচরে এসে পৌঁছেছে। ভাসানচরে থাকা প্রতিটি পরিবারের মধ্যে কোরবানির ঈদের দিন মাংস বিতরণ করা হবে।

কোরবানির বিষয়ে আয়েশা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, 'ঈদ তো আনন্দের উপলক্ষ। শুনেছি সবার ঘরে ঘরে গরুর মাংস দেওয়া হবে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভালোভাবে ঈদ কাটবে। গত ঈদের মতো এবারও বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার আয়োজন থাকছে। এত বড় খোলামেলা এলাকা। সবাইকে নিয়ে এখানে ঘুরতেও ভালো লাগে।

ভাসানচরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা আজ রবিবার জানান, কোরবানির জন্য বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার দেওয়া গরু রোহিঙ্গাদের কাস্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিআইপি ভবনের খোলা জায়গা থেকে গরুগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় রোহিঙ্গারা আনন্দ মিছিল করেন।

মূলত জীবিকা নির্বাহের নানা সামগ্রী ও সাহায্য সংস্থার মাধ্যমে কোরবানির গরু দেওয়ার জন্য তারা আনন্দ মিছিল করেন। মিছিলকারীরা গরুগুলোর গায়ে মালা ও বেলুন ঝুলিয়ে তাঁদের আবাসের কাছে নিয়ে যান। মিছিলকারী রোহিঙ্গারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বলেও উল্লেখ করেন ভাসানচরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এতদিন অবস্থান করছিলেন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে। তাদের এক লাখকে সাময়িক বসবাসের জন্য নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। গত বছরের ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

কয়েক দফা মিলে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের নতুন ঠিকানায় এসেছেন। তার মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৪০৯ জন। নারী ৫ হাজার ৩১৯ জন। শিশু ৮ হাজার ৭৯০। ভাসানচরে এ পর্যন্ত জন্ম নিয়েছে ২৪৪ রোহিঙ্গা শিশু।